তাজিংডং.. একটি স্বপ্নের নাম। অফিসিয়ালি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বত। ছোটোবেলায় বইয়ের পাতায় এই পর্বতের নাম পড়েন নি.. এমন মানুষ হয়তো খুব কমই আছে। আমরা বেশির ভাগ মানুষই বইয়ের পাতায় এভারেস্ট জয়ের কাহিনী পড়ে এভারেস্ট জয় করার একটা স্বপ্ন মনে মনে লালন করেছি.. কিন্তু এভারেস্ট জয় মোটামুটি দুঃসাধ্য হলেও আমরা চাইলেই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ চূড়া জয় করে আসতে পারি..
আমরা ছোটোবেলা থেকেই ভ্রমণপিপাসু। এর আগেও আমরা একসাথে অনেক জায়গায় গিয়েছি..তো এবার আমাদের লক্ষ্য ছিলো তাজিংডং-এর চূঁড়ায় ওঠা...তাই বরাবরের মতোই এবারও আমাদের আনঅফিসিয়াল ট্যুর ম্যানেজার রিফাতের ঘাড়েই দায়িত্ব পড়লো প্লানিং করার...
২৬ জানুয়ারী ২০২১, প্লান অনুযায়ী ভোর চারটায় আমরা রায়পুর থেকে যাত্রা শুরু করলাম। আমরা প্রায় সব ট্যুরেই ভোর চারটায়ই যাত্রা শুরু করতাম...তাই এখনো ভোরে গাড়ির শব্দ শুনলেই সেই দিন গুলোর কথা মনে পড়ে যায়। সকাল ৮ টায় আমরা চট্টগ্রাম পৌঁছে গেলাম, চট্টগ্রাম পৌঁছেই এ.কে.খান মোড়ের কুটুমবাড়িতে সকালের নাস্তা সেরে নিলাম। এই কুটুমবাড়ি রেষ্টুরেন্টের সাথেও আমাদের অধিকাংশ ট্যুরের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। নাস্তা সেরে আমরা চলে গেলাম বহদ্দারহাট বাসস্ট্যান্ডে, সেখান থেকে বান্দরবানগামী বাসে করে ১২ টায় বান্দরবান পৌঁছে গেলাম।
| বান্দরবান নামার পর প্রথম গ্রুপ ছবি |
আমাদের পরের গন্তব্য থানছি, থানছি যাবার জন্য দুটি মাধ্যম রয়েছে :
১. পাবলিক বাস
২. চাঁদের গাড়ি
আমরা একটি চাঁদের গাড়ি রিজার্ভ নিয়ে আমাদের থানছির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলাম। চাঁদের গাড়ি ছাড়ার কিছুক্ষনের মাঝেই বুঝে গেলাম ড্রাইভার মামা পুরাই পাংখা। বান্দরবান শহর থেকে বের হবার পরেই মামা রোলার কোস্টার চালানো শুরু করলেন। বলে রাখা ভালো বান্দরবান-থানচি রোড বাংলাদেশের অন্যতম উঁচু ভয়ঙ্কর সুন্দর একটি রোড, এই রোডটি যেমন সুন্দর তেমনি তার মোড়ে মোড়ে রয়েছে মৃত্যুর হাতছানি, একটু মনের ভুল বা অন্যমনস্ক হলেই ঘটে যেতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা যা মৃত্যুর কারণ ও হতে পারে, চোখের নিমিষেই আপনি হারিয়ে যেতে পারেন হাজার হাজার ফুট নিচে, পাহাড় এর বুকে। তো কিছুক্ষনের মাঝেই আমরা মিলনছড়ি পৌঁছে গেলাম....
| মিলনছড়িতে আমরা.. |
মিলনছড়িতে কিছুক্ষন সময় কাটিয়ে আমরা আবার যাত্রা শুরু করলাম। একটু পরেই আমরা পৌঁছে গেলাম চিম্বুক পাহাড়ে, ও তার আগে একটি সেনা চেকপোস্ট এ আমাদের নাম ঠিকানা সব কিছু এন্ট্রি করা হলো এবং আমাদের ড্রাইভার মামাকে ওভার স্পিড এর জন্য একটু উত্তম-মধ্যম দিলো। যাই হোক চিম্বুক পাহাড়ে পৌঁছে দেখি বেলা ২ টা বাজে তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে এখানেই লাঞ্চ সেরে নিবো যদিও কামরুল এর আপত্তি ছিল কিন্তু তারপরেও সবার কথায় খেয়ে নিলো। খাওয়া শেষ করে আবার চাঁদের গাড়ি চলতে শুরু করলো কিছুদূর যেতেই কামরুল এর বমি শুরু হলো, পরে আমরা একটি সেনা ক্যাম্প-এ নেমে একটু ফ্রেশ হলাম, সেখানে আবার নাম ঠিকানা এন্ট্রি করা হলো। সেখান থেকে বের হয়ে একটু পরেই আমরা থানচি পৌঁছে গেলাম, বিকাল তখন ৪ টা...
| থানচি নেমে ড্রাইভার মামাসহ আমরা সবাই |
| কার্ড খেলায় ব্যস্ত সবাই |
রাতে আড্ডা দেওয়ার পর সবাই ঠিক করলাম এবার একটু ঘুমানো উচিত কারন, কালকে থেকে প্রায় সারাদিন হাঁটতে হবে। ঘুমাতে গিয়ে আবিষ্কার করলাম আজকে প্রচন্ড শীত..কটেজে আমাদের একজনকে দুইটা করে পাতলা কম্বল দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তাতেও কাজ হচ্ছিল না..মনে হচ্ছিল বাহিরে তুষার পড়ছে। শীতের কাঁপুনির মাঝেই ভোর হয়ে গেলো..আমরা সবাই আমাদের মিশনের জন্য প্রস্তুত .. সবাই তৈরি হয়ে বের হলাম.. গন্তব্য তাজিংডং..
| তাজিংডং এর উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার আগে |
কটেজ থেকে বের হয়েই সকালের নাস্তা সেরে গাইড মামাকে নিয়ে রওনা দিলাম তাজিংডং-এর উদ্দেশ্যে। প্রায় ৭ মাস পরে আবার ট্রেকিং ট্যুর..আমাদের লাষ্ট ট্রেকিং ট্যুর ছিলো রাঙ্গামাটি... প্রথম ১৫/২০ মিনিট হেঁটেই আমাদের আর্মি ম্যান কামরুল আর রায়হান ছাড়া প্রায় সবাই-ই হাঁপিয়ে গেলাম। তাই একটু বিশ্রাম নিয়ে সেখানে খেজুর আর স্যালাইন খেয়ে শরীর রিচার্জ করে নিলাম...
| রেস্ট টাইম |
আমরা আবারো হাঁটা শুরু করলাম। বরাবরের মতোই আমি এবং হামজা সবার পিছনে পড়ে গেলাম, ১০ জনের দল তিন ভাগ হয়ে গেল..প্রথম ভাগে কামরুল এবং রায়হান ওরা সবার সামনে... দ্বিতীয় ভাগে রিফাত, রবিন, মান্না, ফয়সাল, মিরাজ এবং মনজু ওরা মাঝখানে, আর সবার শেষে আমি, হামজা এবং আমাদের গাইড মামা...
শেষ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন...

Memories of the days
ReplyDeleteGolden Days
DeleteWow!! seems like every moment is visual to me.
ReplyDelete<3
DeleteWaiting for next part
ReplyDeleteCarry on
ReplyDelete