আমাদের আজকের আলোচনা শুরু করার আগে চলুন একটি দৃশ্যপট কল্পনা করি। ধরা যাক আপনি একটি দোকান দেওয়ার কথা ভাবছেন, তাহলে এখন আপনার কি কি লাগবে?
১. প্রথমত, আপনার দোকানের জন্য একটি নাম ঠিক করতে হবে। যেমন: রহিম স্টোর।
২. এবার আপনাকে দোকানের জন্য একটি জায়গা ঠিক করতে হবে বা একটি জায়গা ভাড়া নিতে হবে।
৩. এবার দোকানে বিক্রয়ের জন্য পণ্য-সামগ্রী তুলতে হবে।
এবার আমাদের মূল আলোচনায় আসি, ডোমেইন এবং হোস্টিং কি? সহজ ভাষায় বললে কোনো ওয়েবসাইট এর নামকেই তার ডোমেইন বলা হয়। যেমন: facebook.com, এখানে facebook হচ্ছে ওয়েবসাইট-এর ইউনিক নাম এবং .com হচ্ছে ডোমেইন extension. উপরের দৃশ্যপট থেকে আমরা যদি আমাদের দোকানটিকে একটি ওয়েবসাইট-এর সাথে তুলনা করি তাহলে দোকানের নাম অর্থাৎ রহিম স্টোর হচ্ছে দোকানটির ডোমেইন। এখন extension আবার অনেক ধরণের হয়ে থাকে যেমন
১. Top Level Domain (TLD)
২. Sub-Domain
.com, .org, .net, .info এসবকে Top Level Domain বা TLD বলা হয়। আর একটি ডোমেইন এর ভিতরে আরেকটি ডোমেইন থাকলে তাকে সাব-ডোমেইন বলে যেমন: ahnafscreation.blogspot.com, এর মেইন ডোমেইন হচ্ছে blogspot.com. আমরা যখন ব্লগার এ ফ্রি ওয়েবসাইট খুলি তখন সেটি আমাদের একটি sub-domain দেয়। Top level Domain সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। এই সব ডোমেইন সম্পর্কিত সব ইনফরমেশন আবার DNS সার্ভারে জমা থাকে।
আমাদের ওয়েবসাইটের ফাইলগুলো কোনো জায়গায় রাখতে হয় এবং আমাদের ওয়েবসাইট সেই জায়গা থেকে ফাইলগুলো এক্সেস করে, হতে পারে সেটি আমাদের পার্সোনাল কম্পিউটার, কিন্তু ওয়েবসাইটের ফাইল গুলো এমন কম্পিউটার-এ রাখতে হবে যেটি ২৪ ঘন্টা অন থাকে কারণ যদি কোনো কারণে সেই কম্পিউটারটি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট কাজ করা অফ করে দিবে। এখন আমাদের পার্সোনাল কম্পিউটার সারাক্ষন চালিয়ে রাখা অনেকটাই অসম্ভব। তাই কিছু কোম্পানি আছে যারা কিছু কম্পিউটার সেটআপ করে রেখেছে যা সারাক্ষন চলে এবং সহজে নষ্ট হয় না, এগুলিকে বলে সার্ভার এবং তারা তাদের সার্ভারগুলো বিভিন্ন মানুষের কাছে ভাড়া দিচ্ছে একেই বলা হয় হোস্টিং। এখন আমরা আবার দোকানের উদাহরণে আসি, আপনি দোকানের জন্য যে জায়গাটি ঠিক করলেন বা ভাড়া নিলেন সেটি হচ্ছে আপনার ওয়েবসাইটের হোস্টিং এবং আপনি বিক্রয়ের জন্য যেসব পণ্য তুললেন তা হচ্ছে আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্ট। ধরা যাক, একটি কোম্পানির একটি 1 TB সার্ভার রয়েছে, তারা সেখান থেকে 2 GB, 5 GB, 10 GB করে স্পেস ভাড়া দিচ্ছে, এখন আপনি চাইলে 5 GB ভাড়া নিয়ে আপনার ফাইলগুলো সেখানে রাখতে পারবেন, একে বলা হয় Shared Hosting. আবার কিছু কিছু ওয়েবসাইট আছে অনেক বড়, তাদের নিজেদের জন্য আলাদা ১টি সার্ভারই প্রয়োজন হয় একে বলে Dedicated Server.
এখন ধরা যাক, আপনি আপনার দোকানে ৫০,০০০ টাকার পণ্য তুললেন। যখন প্রতিবার কোনো পণ্য বিক্রি করবেন তখন আপনার দোকান থেকে সেই পণ্যটি কমে যাবে, একসময় কমতে কমতে দেখা যাবে আপনার দোকানে ১ টাকার পণ্য ও নেই, ওয়েবসাইটের ক্ষেত্রে আমরা একে ব্যান্ডউইথ বলতে পারি। আমরা যদি হোস্টিং এর সাথে ১ মাসের জন্য 10 GB ব্যান্ডউইথ পাই, এবং আমাদের ওয়েবসাইটের হোম পেজ-এর সাইজ যদি হয় 2 MB, তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটের হোম পেজ যতবার ভিজিট হবে ততবার আমাদের 2 MB ব্যান্ডউইথ কমতে থাকবে, এভাবে অন্য পেজ ভিজিট করলেও ওই পেজ-এর সাইজও অনুযায়ী ব্যান্ডউইথ কমতে থাকবে। ব্যান্ডউইথ শেষ হয়ে গেলে আমাদের ওয়েবসাইট বন্ধ হয়ে যাবে, তখন আমাদের আবার ব্যান্ডউইথ নিতে হবে।
হোস্টিং এর সাথে আমরা কিছু ই-মেইল এড্রেস পাই। এখন কথা হচ্ছে এই ই-মেইল এড্রেস গুলি কি? এই ই-মেইল এড্রেসগুলি হচ্ছে, আমরা চাইলে আমাদের ডোমেইন অনুযায়ী ই-মেইল এড্রেস খুলতে পারি। যেমন: info@facebook.com, যা ফেইসবুক-এর ডোমেইন দিয়ে তৈরী করা একটি ই-মেইল এড্রেস। এসব ই-মেইলে আসা মেইলগুলি আমরা আমাদের হোস্টিং-এর কন্ট্রোল প্যানেলে গিয়ে এক্সেস করতে পারি।
আসা করি ব্যাপারগুলি বুজতে পেরেছেন। আপনার মতামত কমেন্টে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ..
DNS Server সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন


Very informative post
ReplyDelete